toilet3

ঘন ঘন পায়খানা বন্ধ করার উপায় সমূহ

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা এমন একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা প্রায়ই বাংলাদেশে দেখা যায়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, অপরিষ্কার খাবার, দূষিত পানি কিংবা হজমের সমস্যার কারণে ডায়রিয়া হতে পারে। আমাদের দেশের মতো গরম ও আর্দ্র পরিবেশে এই সমস্যাটি আরও বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। গ্রামে কিংবা শহরে অনেক মানুষ প্রতিদিনই এই সমস্যায় ভুগে থাকে। যদিও এটি সাধারণ রোগ, তবুও সঠিক চিকিৎসা না করলে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।

বাংলাদেশে অনেক মানুষ ডায়রিয়াকে তেমন গুরুত্ব দেন না। কেউ কেউ মনে করেন এটি সামান্য অসুখ এবং কয়েকদিনে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ডায়রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হলে শরীর থেকে প্রচুর পানি এবং লবণ বের হয়ে যায়। এ কারণে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হয়, যা অনেক সময় বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে ছোট শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং অসুস্থ রোগীদের জন্য এটি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।

ডায়রিয়া হলে আমাদের শরীরে প্রথম যে সমস্যাটি দেখা দেয় তা হলো দুর্বলতা। শরীর হঠাৎ করে ভেঙে পড়ে, খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়, পেট মোচড়াতে থাকে, এবং অনেক সময় জ্বর বা বমিও হতে পারে। এজন্য ডায়রিয়াকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। বরং যত দ্রুত সম্ভব সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

বাংলাদেশে ডায়রিয়া হলে সাধারণত সবাই প্রথমেই খোঁজ করেন ওষুধের। কিন্তু সব সময় ওষুধই প্রথম সমাধান নয়। অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং ওরস্যালাইন খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়। তবে দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া উচিত।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ডায়রিয়ার সময় শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখা। এজন্য ওরস্যালাইন খাওয়া সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি ওষুধের দোকানেই ওরস্যালাইন পাওয়া যায় এবং এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য। এছাড়াও বাসায় বসেই লবণ-চিনি মিশিয়ে স্যালাইন তৈরি করা যায়।

ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার। যেমন – পরিষ্কার পানি পান করা, রান্না করা খাবার খাওয়া, হাত ধোয়ার অভ্যাস করা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা।

সবশেষে বলা যায়, ডায়রিয়া একটি সাধারণ রোগ হলেও সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা না নিলে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত?

toilet5

ডায়রিয়া হলে প্রথমেই মনে রাখা দরকার, সব ক্ষেত্রে ওষুধ খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেক সময় ডায়রিয়া নিজের থেকেই কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া হয় এবং ওরস্যালাইন খাওয়া হয়। তবে গুরুতর ডায়রিয়া হলে বা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে অবশ্যই ওষুধ খেতে হয়।

বাংলাদেশে ডায়রিয়ার চিকিৎসায় প্রথম ধাপ হলো শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করা। এজন্য ওরস্যালাইন খাওয়া সবচেয়ে জরুরি। এটি শুধু পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে না, শরীরের দুর্বলতাও কমায়। ওরস্যালাইন না থাকলে বাড়িতে লবণ-চিনি মিশিয়ে খাওয়াও কার্যকর।

ডায়রিয়া যদি হালকা হয়, তবে সাধারণত ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবে যদি পায়খানা বারবার হয়, শরীর দুর্বল হয়ে যায়, পেট মোচড়ে ব্যথা করে অথবা জ্বর আসে, তখন কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যেমন –

  • লোপেরামাইড (Loperamide): এটি পায়খানা কমাতে সাহায্য করে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • মেট্রোনিডাজল (Metronidazole): যদি ডায়রিয়া জীবাণু বা ইনফেকশনের কারণে হয় তবে এই ওষুধ ডাক্তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেওয়া হয়।
  • সিপ্রোফ্লক্সাসিন (Ciprofloxacin): ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়। তবে এটি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে নিতে হবে।
  • জিঙ্ক ট্যাবলেট: শিশুদের ডায়রিয়ার সময় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ডায়রিয়ার স্থায়িত্ব কমায় এবং শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আরোও পড়ুনঃ  মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা

বাংলাদেশে অনেকেই ডায়রিয়া হলে নিজের মতো করে ওষুধ খেতে শুরু করেন, যা অনেক সময় বিপজ্জনক হয়ে যায়। ভুল ওষুধ খেলে ডায়রিয়া আরও খারাপ হতে পারে বা শরীরে অন্য জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, ডায়রিয়া যদি দুই দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা খুব বেশি দুর্বলতা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া।

এছাড়া ডায়রিয়ার সময় যেসব ওষুধ খাওয়া উচিত নয় তা-ও জানা জরুরি। যেমন, অ্যান্টিবায়োটিক সব সময় খাওয়া উচিত নয়। কারণ সব ডায়রিয়ার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হয় না। আবার ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক ওষুধই ক্ষতিকর হতে পারে।

সুতরাং, ডায়রিয়া হলে ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই পরিস্থিতি বুঝতে হবে। হালকা ডায়রিয়ায় ওরস্যালাইন ও তরল খাবারই যথেষ্ট। কিন্তু যদি গুরুতর হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া উচিত।

ঘন ঘন পায়খানা বন্ধ করার উপায় সমূহ

toilet6

ঘন ঘন পায়খানা বা ডায়রিয়া অনেকের জন্য অস্বস্তিকর। এটি শুধু শারীরিক সমস্যা নয়, মানসিক অস্বস্তিও তৈরি করে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী নারীর জন্য এটি আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশের অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও দূষিত পানি এই সমস্যার প্রধান কারণ। তবে কিছু নিয়মিত অভ্যাস ও চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে চললে ঘন ঘন পায়খানা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

১. পর্যাপ্ত পানি পান করা

ঘন ঘন পায়খানার সময় শরীরে প্রচুর পানি চলে যায়। এই কারণে শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে পর্যাপ্ত পানি পান করা। সাধারণত দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। শুধু পানি নয়, স্যালাইন বা হালকা লেবুর পানি, নারকেল পানি ইত্যাদিও সাহায্য করে।

শরীর থেকে পানি বের হওয়ার কারণে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, জ্বর ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য পানি হারানো বেশি বিপজ্জনক। তাই তাদের আরও বেশি পানি দেওয়া উচিত।

পানি ছাড়া শরীর ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। হজম প্রক্রিয়াও ধীর হয়ে যায়। তাই ডায়রিয়ার সময় পানি পান করার সাথে সাথে শরীরে লবণ ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।

বাংলাদেশের গরম পরিবেশে পানি পান আরও গুরুত্বপূর্ণ। দিনে কয়েকবার ছোট ছোট পরিমাণে পানি খাওয়া ভালো। একবারে বেশি পানি খাওয়া অনেক সময় হজমের জন্য ভালো হয় না।

শিশু, বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি ও স্যালাইন দেওয়া উচিত। অল্প অল্প করে পানি খাওয়াই সবচেয়ে কার্যকর।

২. ওরস্যালাইন বা স্যালাইন গ্রহণ

ঘন ঘন পায়খানার সময় শরীর থেকে শুধু পানি নয়, লবণও দ্রুত বের হয়ে যায়। এটি হলে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, পেশীতে ব্যথা এবং হার্টের সমস্যার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই এই সময়ে ওরস্যালাইন বা স্যালাইন গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওরস্যালাইন শরীরে হারানো লবণ ও ইলেক্ট্রোলাইট ফিরিয়ে আনে এবং ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমায়।

আরোও পড়ুনঃ  কোন কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে?

বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি ফার্মেসিতে ওরস্যালাইন সহজে পাওয়া যায়। এটি শিশু, বৃদ্ধ ও প্রাপ্তবয়স্ক সকলের জন্য নিরাপদ। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডোজ নির্ধারণ করা উচিত।

বাড়িতে বসেও সহজভাবে স্যালাইন তৈরি করা যায়। সাধারণত ১ লিটার পানি, ৬ চামচ চিনি এবং আধা চামচ লবণ মিশিয়ে হালকা গরম করা হয়। এই স্যালাইন ছোট ছোট মাত্রায় বারবার খাওয়াই ভালো। একবারে বেশি খাওয়া হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।

ওরস্যালাইন খাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে, এটি কখনও কখনও পেট ফোলানো বা অল্প বমি ভাব দিতে পারে। তবে এটি শরীরের জন্য নিরাপদ এবং ডায়রিয়ার সময় সবচেয়ে কার্যকর।

ডায়রিয়ার শুরুতেই ওরস্যালাইন খাওয়া শুরু করলে অনেক সময় অতিরিক্ত ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না। এটি শরীরকে শক্ত রাখে এবং পুনরায় শক্তিশালী হতে সাহায্য করে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশন খুব দ্রুত ঘটে। তাই শিশুদের পায়খানা হলে ওরস্যালাইন দিয়ে শুরু করা সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর পদ্ধতি।

এছাড়াও, বয়স্ক বা অসুস্থ রোগীর জন্যও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়রিয়ার সঙ্গে জ্বর, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা দেখা দিলে ওরস্যালাইন দেওয়া একেবারেই প্রয়োজন।

৩. হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া

ঘন ঘন পায়খানার সময় পেট খুব সংবেদনশীল থাকে। তাই এই সময় ভারী বা মসলাদার খাবার খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার খেলে হজম ঠিক থাকে এবং পেটকে আরাম মেলে। সাধারণত ভাত, রুটি, সিদ্ধ আলু, সেদ্ধ ডাল, সেদ্ধ মুরগির মাংস বা মাছ হালকা খাবারের মধ্যে ধরা হয়।

বাংলাদেশে অনেক মানুষ ডায়রিয়ার সময় ভাজা, তেলযুক্ত বা মসলা জাতীয় খাবার খায়। এটি পেটকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং পায়খানা দীর্ঘায়িত করতে পারে। তাই ডায়রিয়ার সময় এসব খাবার সম্পূর্ণ এড়ানো উচিত।

ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে হালকা দুধ বা দই খাওয়াও সহায়ক। দইতে থাকা প্রোবায়োটিক হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখে এবং পেটের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে দুধ অনেকের জন্য সমস্যাজনক হতে পারে, বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। তাই প্রথমে হালকা দই খাওয়াই ভালো।

হালকা খাবার ধীরে ধীরে খেতে হবে। একবারে বেশি খাওয়া পেটের উপর চাপ বাড়ায় এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। দিনে কয়েকবার ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খাওয়া সবচেয়ে কার্যকর।

ডায়রিয়ার সময় প্রচুর চটপটে বা ঠান্ডা খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এটি পেটের উপর প্রভাব ফেলে এবং ঘন ঘন পায়খানা বাড়ায়। তাই গরম, হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।

শিশু বা বৃদ্ধদের জন্য হালকা খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি দেওয়াও জরুরি। এটি শরীরকে শক্ত রাখে এবং পুনরায় সুস্থ হতে সাহায্য করে।

বাংলাদেশে প্রচলিত হালকা খাবারের মধ্যে ভাত, ডাল, সেদ্ধ আলু, সেদ্ধ মাংস বা মাছ, হালকা স্যুপ এবং দই অন্যতম। এগুলো হজমে সহজ এবং পেটকে আরাম দেয়।

ডায়রিয়ার সময় হঠাৎ করে স্বাভাবিক ভারী খাবারে ফিরে যাওয়া উচিত নয়। প্রথমে হালকা খাবার দিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসা সবচেয়ে নিরাপদ।

৪. প্রোবায়োটিক গ্রহণ

প্রোবায়োটিক হলো ভালো ব্যাকটেরিয়া, যা পেটের হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখে। দই, ছানা, কেফির বা প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট খেলে পেটের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে।

ডায়রিয়ার সময় প্রোবায়োটিক শরীরকে শক্ত রাখে এবং পুনরায় পেটের কার্যক্রম ঠিক রাখে। শিশু, বৃদ্ধ এবং গর্ভবতী নারীর জন্য প্রোবায়োটিক নিরাপদ।

আরোও পড়ুনঃ  ব্রেন স্ট্রোক হলে কি করনীয়?

প্রোবায়োটিক নিয়মিত খেলে দীর্ঘমেয়াদে পেটের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। তবে প্রচুর চিনি যুক্ত দই খাওয়া উচিত নয়।

৫. অ্যান্টি-ডায়রিয়াল ওষুধ ব্যবহার

গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তার অ্যান্টি-ডায়রিয়াল ওষুধ দিতে পারেন। যেমন লোপরামাইড। শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা দরকার। ওষুধ শুধুমাত্র ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। ভুল ওষুধ পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে।

৬. হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখা

হাত ধোয়া হল ডায়রিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায়। খাবার খাওয়ার আগে, বাথরুম ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া জরুরি। বাংলাদেশের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হাত ধোয়ার অভ্যাস অনেক জায়গায় কম। এটি ডায়রিয়ার প্রধান কারণ।

৭. অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়ানো

রাস্তার খাবার, অপরিষ্কার পানি ও পুরনো খাদ্য এড়ানো আবশ্যক। এসব খাবার ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। শুধু শিশু নয়, বড়রাও অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়ালে ডায়রিয়া কমে।

৮. গরম খাবার এবং দুধের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ

ঠান্ডা খাবার বা দুধ অনেকের পেটের জন্য সমস্যা তৈরি করে। ডায়রিয়ার সময় গরম এবং হালকা খাবার খাওয়া ভালো।দুধ খুব বেশি খাওয়া হজমে সমস্যা দেয় এবং ডায়রিয়াকে দীর্ঘায়িত করে।

৯. ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া

ডায়রিয়ার পরে হজম ঠিক রাখার জন্য ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, সবজি, ফল এবং ওটস। এটি পেটের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে এবং পুনরায় ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে।

১০. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা

যদি দুই দিন বা তার বেশি সময় পায়খানা বন্ধ না হয় বা জ্বর, দুর্বলতা, রক্তের পায়খানা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডায়রিয়া অনেক সময় সাধারণ হলেও দীর্ঘমেয়াদে গুরুতর আকার নিতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শই সবচেয়ে নিরাপদ।

পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম সমূহ

toilet4

বাংলাদেশে ডায়রিয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। সবচেয়ে সাধারণ ওষুধ হলো – লোপরামাইড, মেট্রোনিডাজল, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, জিঙ্ক ট্যাবলেট। এগুলো ডায়রিয়ার প্রকৃতি অনুযায়ী ডাক্তার দিচ্ছেন।

লোপরামাইড পায়খানা কমায়, মেট্রোনিডাজল এবং সিপ্রোফ্লক্সাসিন ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়ায় কার্যকর। জিঙ্ক ট্যাবলেট বিশেষ করে শিশুদের জন্য উপকারী।

বাংলাদেশে ফার্মেসিতে এগুলো সহজে পাওয়া যায়। তবে কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

“ঘন ঘন পায়খানা বন্ধ করার উপায় সমূহ” এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো-

ডায়রিয়ার সময় ওরস্যালাইন কতোবার খাওয়া উচিত?

সাধারণত দিনে ৪-৫ বার ছোট ছোট পরিমাণে খাওয়া উচিত। শিশু বা অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ঘন ঘন পায়খানার সময় কোন খাবার এড়ানো উচিত?

ভাজা, মসলাযুক্ত, ঠান্ডা খাবার ও রাস্তার খাবার এড়ানো উচিত। হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া সবচেয়ে ভালো।

উপসংহার

ঘন ঘন পায়খানা বা ডায়রিয়া সাধারণ হলেও এটি সঠিক যত্ন না নিলে গুরুতর আকার নিতে পারে। পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা, হালকা খাবার খাওয়া, প্রোবায়োটিক গ্রহণ, ওরস্যালাইন ব্যবহার, এবং অ্যান্টি-ডায়রিয়াল ওষুধ যথাযথভাবে গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ও আবহাওয়া অনুযায়ী এই রোগ অনেক সাধারণ। তবে পরিচর্যা ও সঠিক পদক্ষেপ নিলে ডায়রিয়ার সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করা সবচেয়ে নিরাপদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *